রাজা ধর্মপাল এর পরিচয় দাও। 211001

রাজা ধর্মপাল

ধর্মপালের পরিচয় দাও।

ধর্মপাল এর পরিচয়: পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের যোগ্য পুত্র সন্তান ধর্মপাল। ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদারের মতে, পিতার মৃত্যুর পর আনুমানিক ৭৭০ সালে ধর্মপাল সিংহাসনে আরোহন করেন। ধর্মপাল বীর, সাহসী ও রাজনীতিকুশল ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রকুটরাজ পরবলের কন্যা রন্নাদেবীকে বিয়ে করেন। তিব্বতীয় ঐতিহাসিক লামা তারনাথের মতে ধর্মপালের রাজ্য পূর্বে বঙ্গোপসাগর থেকে পশ্চিমে দিল্লী ও জয়পুর পর্যন্ত এবং উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্যা পর্বত পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। তিনি ‘পরমেশ্বর পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ’ উপাধি গ্রহণ করেন।
তিব্বতীয় গ্রন্থে ধর্মপালের অনেক কৃতিত্বের কথা উলে¬খ আছে। পিতার ন্যায় তিনিও বৌদ্ধ ছিলেন। কিন্তু হিন্দু ধর্মের প্রতি পরমত সহিষ্ণু ছিলেন। বিহারে তিনি একটি বৌদ্ধমঠ নির্মাণ করেন। এই বিহারটি ‘বিক্রমশীল বিহার’ নামে অভিহিত হয়। নালন্দার ন্যায় বিক্রমশীল বিহারও ভারতের সর্বত্র পরিচিতি ও প্রসিদ্ধি লাভ করে। গঙ্গাতটে একটি প্রধান মন্দির ও এর চারদিকে আরও ১০৭টি ছোট মন্দির ছিল, এটি উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র ছিল এবং এখানে ১১৪ জন শিক্ষক নানা বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। রাজা ধর্মপাল বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরে ‘সোমপুর বিহার’ নামে একটি বৌদ্ধবিহার প্রতিষ্ঠা করেন। তিব্বতীয় ঐতিহাসিক লামা তারনাথের মতে রাজা ধর্মপাল ধর্মশিক্ষার জন্য ৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। অন্য ধর্মের প্রতি তিনি সহিষ্ণু ছিলেন। তার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ, এটা তার মানসিক উদারতার পরিচয়।

ঐতিহাসিক ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদার মনে করেন যে, ধর্মপাল সম্ভবত ৭৭০ সাল থেকে ৮১০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছেন।

সালেক শিবলু, এমফিল গবেষক,বাংলা বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *